গুরুর সাথে (দুই)

গুরু বললেন

গুরু শান্তভাবে বললেন, চায়ের মধ্যে বিষ আছে

আমরা বললাম, এই মরুপ্রান্তরে, চায়ের মধ্যে বিষ, কেমনে?

গুরু অঙ্গুলি হেলনে দেখালেন, যাইতেছে চলে এক র‍্যাটল স্নেক

মরু প্রান্তরে জনমানব নাই, খালি বালু আর অগ্নির প্রখরতাসূচক রোদ

আমাদের কী দশা হবে

ভাবিয়া ব্যাকুল হই আমরা

গুরু ভাবেন না

বলেন, অন্ধকার বেশি হইলেই ভালো, সেইখানে তারা হইয়া উঠা সহজ

আমরা যদিও ভীত ছিলাম

তথাপি গুরুর কাছে সমবেত হইলাম

তিনি শান্ত ভাবে বসে আছেন

আমরা তাকে প্রশ্ন করিলাম, মৃত্যুদণ্ড বিষয়ে আপনার মত কী?

গুরু বললেন, নেতিবাচক। আমি চাই না দণ্ড হিসেবে কাউরে মৃত্যু দেয়া হোক, পুরুস্কার হিসাবেও না দেয়া হউক।

সেইটা ক্যামনে গুরু?

গুরু হাসেন। বলেন, সব বুঝতে চাও কেন? আমরা সব বুঝি, তাই আমরা কিছুই বুঝি না।

আমাদের একজন জিজ্ঞেস করে, গুরু কথার অর্থ বুঝা যায় না।

গুরু হাসেন, বলেন, সবই বিভ্রান্তি।  আমার আগের কথাটিও।

একজন জিজ্ঞেস করল, গুরু একাকীত্ব কী?

গুরু বললেন, সময়ের চাইতে আগাইয়া থাকা, আর দূরে এক জায়গায় বইসা অন্যদের জন্য অপেক্ষা করা। দূর থেকে ইশারায় তাদের পথ দেখানোর চেষ্টা।  এই যেমন আমি।

আরেকজন জিজ্ঞেস করল গুরু হৃদয়ের ভাষা কী?

গুরু বললেন, রক্ত।

আমরা জিজ্ঞাসিলাম, মানে কি গুরু? এইটা বুঝাইয়া বলতেই হবে।

গুরু বললেন, হৃদয় হইল হৃদযন্ত্র। হৃদযন্ত্রের আহার হচ্ছে রক্ত। এই জন্য হৃদয়ের ভাষা বুঝতে যাইতে নাই।

ইতিমধ্যে ওই র‍্যাটল স্নেক এদিকে চলে এসেছে। সেও কি গুরুর কথা শুনতেছিল? বিষাক্ত সাপের আগমনে আমরা ভয় পাইলাম।

স্মিত হাস্যে গুরু হাত বাড়াইয়া দিলেন, এবং এরপর সেই বিস্ময়কর দৃশ্য

গুরুর হাতে উঠে গেল বিষময় র‍্যাটল স্নেক

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

শেয়ার